জনসংযোগ কার্যক্রমের হাতিয়ারসমূহ । CAJ Academy
ফলপ্রসূ জনসংযোগ কার্যক্রমের জন্য একজন জনসংযোগ কর্মকর্তা কি কি হাতিয়ার ব্যবহার করে থাকেন
পেশাদার পর্যায়ে একজন জনসংযোগ বিদকে একইসঙ্গে উপদেষ্টীয় থেকে গৃহকর্তীয় ভূমিকা পালন করতে হয়।জনসংযোগ কর্মকর্তাকে এসব কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কিছু হাতিয়ার ব্যবহার করতে হয়।
নিম্নে জনসংযোগ কর্মকর্তার ব্যবহৃত বিভিন্ন হাতিয়ার সম্পর্কে অালোচনা করা হল:
জনসংযোগ হাতিয়ার /পদ্ধতি(Tools/Tactics/Methods of PR):-
জনসংযোগের হাতিয়ারগুলোকে প্রধানত ৪ টি ভাগে ভাগ করা যায়।যথা:
১.নতুন পদ্ধতি (New Technology)
২.মৌখিক হাতিয়ার(Spoken Tools)
৩.লিখিত হাতিয়ার(Written Tools)
৪.দৃশ্যমান হাতিয়ার(Visual Tools)
Know More……নোয়াম চমস্কি | Noam Chomsky
নিম্নে এগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত অালোচনার চেষ্টা-
১.নতুন প্রযুক্তি:
– নতুন নতুন যেসব প্রযুক্তি বের হচ্ছে তার মাধ্যমে জনসংযোগ। যেমন:
ক) কম্পিউটার :–
বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির এযুগে শুধু PR না, বরং যেকোন মানুষের জন্য প্রধান হাতিয়ার হল কম্পিউটার।জনসংযোগ কর্মকর্তার কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাহন।
খ)ডেস্কটপ পাবলিশিং:–
মুদ্রণযন্ত্র অাবিষ্কারের পর থেকে কম্পিউটার দিয়ে যেকোন ধরণের কপি করতে পারি।সেটা কম্পিউটারের মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রাফিক্স ডিজাইন ও রং ব্যবহার করে করা যাচ্ছে।
গ)অনলাইন কনফারেন্স:-
ওয়েবক্যাম ব্যবহার করে অনলাইন কনফারেন্স করা যাচ্ছে।অর্থাৎ যার সাথে কথা বলছি তাকে দেখেও কনফারেন্স করা যাচ্ছে।
ঘ)টেলি কনফারেন্স:–
দেশের বাইরেবও দেশের অভ্যন্তরে টেলি কনফারেন্সের মাধ্যমে সহজে যোগাযোগ করা যাচ্ছে।
ঙ)ফ্যাক্স:-
ফ্যাক্স এর মাধ্যমে অনেকগুলো বিষয় অাদান প্রদান হচ্ছে।
চ)মোবাইল:–
মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে সহজে যোগাযোগ করা যাচ্ছে।
ছ) স্যাটেলাইট:–
স্যাটেলাইট দিয়ে সরাসরি কথা বলছি,প্রশ্ন করছি,যোগাযোগ করছি।
জ)ইন্টারনেট:-
ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একে অপরের সাথে সহজে যোগাযোগ রাখছি।
২.মৌখিক হাতিয়ার:–
জনসংযোগ কর্মকর্তার মৌখিক হাতিয়ারের মধ্যে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত:
ক) মুখোমুখি অালোচনা:–
মুখোমুখি অালোচনা সবচেয়ে বেশি কার্যকরী।এতে ভুল বোঝার সম্ভাবনা কম থাকে।Aggressive না হয়ে Friendly কথা বলতে হবে।এক্ষেত্রে কিছু বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হয়।যেমন:-
*অালোচনার জন্য পূর্বে টেলিফোনে কথা দিতে হবে।
*উদ্দেশ্য নির্ধারণ করতে হবে এবং সেভাবে কাজ করতে হবে।
*সংক্ষেপে বা সাবলীলভাবে বলা।
*অতিরিক্ত বাড়িয়ে না বলা,অাসল কথা বলতে হবে।
*মূল্যায়ন করা।
খ) বক্তব্য লিখা:-
বক্তব্য লেখা একটি অার্ট বা কৌশল।বক্তব্য লেখার ক্ষেত্রে অনেকগুলো টেকনিক রয়েছে।জনসংযোগ কর্মকর্তাকে ভালো বক্তব্য লিখতে হয়।বক্তব্য লিখার ক্ষেত্রে কিছু মৌলিক বিষয় উল্লেখযোগ্য:-
*বক্তব্য এমনভাবে লিখতে হবে যাতে এটার স্থায়িত্ব মূল্য থাকে।এটা তাৎপর্যপূর্ণ্য হতে হবে।
*বক্তব্যের কিছু তাৎপর্য,সারমর্ম ও থিম থাকতে হবে।উদ্দেশ্য অনুযায়ী থিম দিতে হবে।
*তথ্যের যথার্থতা ও সঠিকতা থাকতে হবে, কোন ভুল তথ্য দেওয়া যাবে না।
*শ্রোতা সংশ্লিষ্ট হতে হবে।অর্থাৎ দর্শক শ্রোতার কথা মাথায় রেখে বক্তব্য তৈরি করতে হবে।
*বক্তব্যের সুস্পষ্টতা থাকতে হবে।দ্ব্যর্থবোধক কোন শব্দ বা বাক্য ব্যবহার করা যাবে না
গ) বক্তব্যের অায়োজন করা:-
একটি বক্তব্যের অায়োজন করা বা সঞ্চায়ন করা।এই বক্তব্য অায়োজনে সব বিষয়ে ব্যবস্থাপনা এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া।এক্ষেত্রে দুটি বিষয় বিবেচ্য-
*স্থান : কোথায় বক্তব্যের অায়োজন করা হবে।
*সময়: কখন বক্তব্যের অায়োজন করা হবে।
ঘ) সংবাদ সম্মেলন:- সংবাদ সম্মেলনের ব্যবস্থা করা।এক্ষেত্রে কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হয়:-
*সংবাদ সম্মেলনে কোন ধরনের ‘অফ দ্যা রেকর্ড’ কথা বলা যাবে না।
*মিথ্যা বলা যাবে না।মিথ্যা বললে PRO অারো ঝামেলায় পড়বে।
*সাংবাদিকদের সহজে পাওয়া যাবে এমন জায়গায় সংবাদ সম্মেলন দিতে হবে।
*ডেডলাইন মনে রেখে প্রেস কনফারেন্স দিতে হবে।
*সাংবাদিকদেরকে অাগে বলে দেয়া উচিত।
*যিনি কথা বলবেন অর্থাৎ মুখপাত্রকে লিখিত বিবৃতি দিতে হবে।
*যে বিষয়ে কথা বলবে তা প্রিন্ট করে সাংবাদিকদের দিতে হবে।
ঙ) সংবাদ কর্মীদের পার্টির ব্যবস্থা করা:-
কোন একটি প্রতিষ্ঠান সাংবাদিকদেরকে নওয়ে খাবারের ব্যবস্থা করে।এখানে খাওয়ার অাগে বা পরে কথা বলা হয়।
চ) সংবাদকর্মীদের ভ্রমণে নিয়ে যাওয়া:-
এখানে সংবাদকর্মীদের নিয়ে একটি ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হয় এবং অনেক সময় উপকারও দেওয়া হয়।
ছ) সাক্ষাৎকার:-
সাক্ষাৎকার নেওয়া।এটা এমন একটা বিষয়,যার মাধ্যমে অনেক বিষয় সমাধান করা যায়।
জ) সভার অায়োজন করা:–
সভার অায়োজন করতে হয়।PRO কে সভার অালোচ্যসূচী নির্ধারণ করতে হয়।সভা পরিচালনা সহ সব বিষয়ে তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
ঝ) মুখের কথা:-
মুখের কথা বলতে এক ধরনের অনানুষ্ঠানিক অান্তঃব্যক্তিক যোগাযোগকে বোঝানো হয়েছে।এ পদ্ধতিতে অনেক সময় কোন সমস্যার কার্যকর সমাধান সম্ভব।
৩.লিখিত হাতিয়ার:–
একজন জনসংযোগ কর্মকর্তা নিম্নলিখিত লিখিত হাতিয়ার গুলো ব্যবহার করে থাকেন..
ক)সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:-
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি একজন জনসংযোগ কর্মকর্তার অনেক বড় হাতিয়ার।তিনি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি লিখে মিডিয়াতে পাঠান।এক্ষেত্রে তাকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি লেখার নিয়ম নীতি গুলো অনুসরণ করতে হয়।
খ)সংবাদ চিঠি:-
অামাদের দেশে এর প্রচলন কম।সংক্ষিপ্তভাবে কর্পোরেট কোম্পানী তার বার্তা দেওয়ার জন্য নিজের স্বার্থে যে প্রকাশনা ছাপে এবং বিলি করে তাই নিউজ লেটার।
গ) কোম্পানী সাময়িকী:–
তিন মাস অন্তর ত্রৈমাসিক ম্যাগাজিনের মত যে সাময়িকী বের করা হয়।এটার কারণ হচ্ছে এগুলোর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানে সবার সাথে একাত্মতা বজায় রাখা হয়।
ঘ) লিফলেট,প্রচারপত্র ও হ্যান্ডবুক:-
এগুলো জনসংযোগ কর্মকর্তার অন্যতম হাতিয়ার।মিডিয়ার লোকদেরকে এটা বিতরণ করার চেষ্রা করা হয়।
ঙ) বার্ষিক প্রতিবেদন:–
একজন জনসংযোগ কর্মকর্তার অন্যতম দায়িত্ব হচ্ছে কোন কোম্পানীী বার্ষিক প্রতিবেদন তুলে ধরা।অনেক সময় এ বিষয়ে পত্রিকায় ও ছাপা হয়।এখানে দুই ধরনের প্রতিবেদনের কথা বলা হয়:-
* অার্থিক প্রতিবেদন
* ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত সমস্যা ও সম্ভাবনা
চ) কর্পোরেট বিজ্ঞাপন:-
কর্পোরেট বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত তথ্য প্রদান করে থাকে।এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের সুনাম বৃদ্ধি হ।PRO এ কাজ করে থাকেন।
৪) দৃশ্যমান হাতিয়ার:-
একজন জনসংযোগ কর্মকর্তা তার জনসংযোগ কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনারবজন্য নিম্নলিখিত দৃশ্যমান হাতিয়ার সমূহ ব্যবহার করে থাকেন:-
ক) টিভি স্টেশনে সংবাদ সরবরাহ:–
বিভিন্ন টিভি স্টেশনে সংবাদ সরবরাহ করা জনসংযোগ কর্মকর্তার কাজ।এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ডেকে এনে নিজেদের সংবাদ কাভার করতে বলতে পারেন।
খ) ভিডিও সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:-
ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় এটা পাঠানো হয়।প্রেস রিলিজকে যখন ভিডিও করে ক্যাসেটের মাধ্যমে পাঠানো হয়,তখন তাকে ভিডিও সংবাদ বিজ্ঞপ্তি বলে।
প্রতিষ্ঠানের কোন সুনাম বা কাজ নিয়ে ভিডিও চিত্র বানিয়ে তা টিভিতে দেয়া বা প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেখাতে পারে।
ঙ) চলচ্চিত্র বানানো :–
কোন প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস,কাজ ও অাদর্শ ইত্যাদি নিয়ে চলচ্চিত্র বা সিনেমা তৈরী করা যায়।
চ) কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ছবি সংরক্ষণ করা:-
প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কাজের,অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পরিস্থিতির ছবি তুলে রাখা বা তা টাঙিয়ে রাখতে পারে বা চিত্র প্রদর্শনীর অায়োজন করা যেতে পারে।
ছ)কমিক বই ও কার্টুন:-
এর মাধ্যমে যোগাযোগ সহজ হয়।এক্ষেত্রে সেন্স অফ হিউমার দরকার হয়।
জ) বহির্প্রদর্শনী:-
প্রতিষ্ঠানের বাইরে গিয়ে কোন কর্মশালা করলে,প্রজেক্টরের সাহায্যে দেখালে তা বেশি অাকর্ষণীয় হবে।
ঝ) কর্পোরেট ডিজাইন:-
প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব স্বকীয়তা বোঝানোর জন্য নিজস্ব ডিজাইন ও কারুকার্য থাকবে।এতে মানুষকে অাকৃষ্ট করা যায়।
চ) কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ছবি সংরক্ষণ করা:-
প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কাজের,অনুষ্ঠানের বিভিন্ন পরিস্থিতির ছবি তুলে রাখা বা তা টাঙিয়ে রাখতে পারে বা চিত্র প্রদর্শনীর অায়োজন করা যেতে পারে।
ছ)কমিক বই ও কার্টুন:-
এর মাধ্যমে যোগাযোগ সহজ হয়।এক্ষেত্রে সেন্স অফ হিউমার দরকার হয়।
জ) বহির্প্রদর্শনী:-
প্রতিষ্ঠানের বাইরে গিয়ে কোন কর্মশালা করলে,প্রজেক্টরের সাহায্যে দেখালে তা বেশি অাকর্ষণীয় হবে।
ঝ) কর্পোরেট ডিজাইন:-
প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব স্বকীয়তা বোঝানোর জন্য নিজস্ব ডিজাইন ও কারুকার্য থাকবে।এতে মানুষকে অাকৃষ্ট করা যায়।
No comments