সম্প্রচার নীতিমালা ২০১৪ | Broadcast policy 2014

সম্প্রচার নীতিমালা ২০১৪ 


বর্তমান বিশ্বে সম্প্রচার মাধ্যম বিশেষ করে বেতার এবং টেলিভিশন গুরুত্বপূর্ণ ও শক্তিশালী গণমাধ্যম, প্রযুক্তিগত উন্নয়নে র ফলে সারা বিশ্বে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে প্রচারিত সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান সমূহের অনুষ্ঠানমালা এখন বাংলাদেশেও প্রচারিত হচ্ছে।

আধুনিক বিশ্বের সম্প্রচার মাধ্যমসমূহ নিজস্ব প্রয়োজনের বাইরে বেসরকারি ও সৃজনশীল ব্যক্তি অথবা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্মিত অনুষ্ঠান প্রচারের ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। এতে করে সৃজনশীল ও নান্দনিক অনুষ্ঠানের সুস্থ প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

সম্প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত অনুষ্ঠান এবং বিজ্ঞাপনসমূহ দর্শক – শ্রোতাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে। এজন্য এসব অনুষ্ঠান ও বিজ্ঞাপন দেশের ঐতিহ্য ও মূল্যবোধের সাথে সংগতিপূর্ণ কিনা সেটা ও বিচার বিবেচনা করা দরকার।

এছাড়া সম্প্রচার মাধ্যম সমূহের দায়বদ্ধতা নিশ্চিতকরণে সরকারের দায়িত্ব রয়েছে । এসব বিষয়কে বিবেচনা করে সম্প্রচার মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনার একটি নীতিমালা থাকা সমীচীন

সম্প্রচার নীতিমালা
সম্প্রচার নীতিমালা

বাংলাদেশের জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা 


বাংলাদেশ সরকার ২০১৪ সালের ৬ আগস্ট গেজেট আকারে সম্প্রচার নীতিমালা জারি করে৷ সম্প্রচার নীতিমালার পটভূমিতে বলা হয়েছে, অংশীজনদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে একটি স্বাধীন বহুমুখী দায়বদ্ধ এবং দায়িত্বশীল সম্প্রচার ব্যবস্থা গড়ে তোলা ও বাংলাদেশের সম্প্রচার মাধ্যমকে একটি সমন্বিত কাঠামোর আওতায় আনার জন্য প্রণীত হলো

সম্প্রচার নীতিমালার উদ্দেশ্য 


সম্প্রচার নীতিমালা প্রণয়নের বেশ কিছু লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের কথা বলা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হলো – 


১. জনগণের মৌলিক অধিকার ও ব্যক্তিস্বাধীনতা সমুন্নত রেখে সম্প্রচার মাধ্যমসমূহের স্বাধীনতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা। 

২. বস্তুনিষ্ঠতা, নিরপেক্ষতা ও গণমুখীতা বজায় রাখা ও তথ্যের অবাধ প্রাপ্তি নিশ্চিত করা। 

৩. দেশের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধি। 

৪. সুস্থ বিনোদনের ধারা তৈরি করা 


৫. নিজস্ব সংস্কৃতি ঐতিহ্য, ইতিহাস ও মূল্যবোধের সাথে সামঞ্জস্য রেখে অনুষ্ঠান সম্প্রচার নিশ্চিত করা। 

Learn More…. বাংলাদেশের জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা বিশ্লেষণ


সম্প্রচার লাইসেন্স


২য় অধ্যায়ে সম্প্রচারের লাইসেন্স প্রদান সংক্রান্ত আলোচনা রয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, প্রত্যেক সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান থেকে লাইসেন্স গ্রহণ করবে। লাইসেন্স প্রদানের জন্য একটি কমিশন থাকবে। কমিশনের নীতিমালার ভিত্তিতে লাইসেন্স প্রদান করা হবে।

সংবাদ ও অনুষ্ঠান সম্প্রচার 


সংবাদ ও অনুষ্ঠান সম্প্রচারের ক্ষেত্রে কিছু মানদণ্ড অনুসরণের কথা বলা হয়ে। 


১.সম্প্রচারিত তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা নিরপেক্ষতা ও দায়িত্বশীলতা 


২. দেশবিরোধী ও জনস্বার্থ বিরোধী সম্প্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে। 


৩. আলোচনা অনুষ্ঠানে বিভ্রান্তিকর অসত্য তথ্য দেওয়া যাবে না। সকল পক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের সুযোগ দিতে হবে। 


৪. সরকার অনুমোদিত জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান জনস্বার্থে সম্প্রচার করতে হবে।

 
৫. মহান মুক্তিযুদ্ধ ও এর ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। 


৬. জাতীয় দিবস সমূহে যথাযথ মর্যাদার সাথে অনুষ্ঠান প্রচার করতে হবে। 


৭. ভাষা সংস্কৃতি ধর্মীয় অনুভূতি ইত্যাদির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে। 


৮. স্বেচ্ছাভিত্তিক কাজ ও উন্নয়ন কার্যক্রম প্রচার করতে হবে। 


৯. শিশু ও নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক বা হয়রানিমূলক অনুষ্ঠান প্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে। 


১০. ক্রীড়া ও শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান প্রচার করতে হবে। অশ্লীল ও হিংসাত্মক অনুষ্ঠান প্রচার করা যাবে না।

বিজ্ঞাপন সম্প্রচার 
চতুর্থ অধ্যায়ে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আসে এমন, পরিবেশবান্ধব নয় এমন, অশ্লীল, ভাষা , সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, ইতিহাস,ঐতিহ্যেরবিকৃতিমূলক বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না। 


২. অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠান, সামাজিক ও আইনগতভাবে স্বীকৃত নয় এমন, বাজি ধরা, মদ -জুয়া সংক্রান্ত সংস্থা বা ব্যক্তির বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না।

সম্প্রচার কমিশন


৬ষ্ঠ অধ্যায় বলা হয়েছে, 


১. আইনের মাধ্যমে একটি স্বাধীন সম্প্রচার কমিশন গঠিত হবে। 


২. কমিশন সম্প্রচারের মান বজায়ে সচেষ্ট থাকবে। 


৩. সম্প্রচারের মাধ্যমে নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হলে কমিশনের নিকট অভিযোগ দায়ের করতে পারবে এবং কমিশন বিধিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে নির্ধারিত শাস্তি নিশ্চিত করবে

৭ম অধ্যায়ে সম্প্রচারের নীতিমালার আলোকে সম্পাদকীয় নীতিমালা প্রণয়নের কথা বলা হয়েছে, যা কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত হবে

অন্যান্য : রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্রিত হতে পারে এমন,সরকারি সামরিক বেসরকারি প্রচার করা যাবে না। ব্যক্তির গোপনীয় বা মর্যাদাহানিকর তথ্য প্রচার করা যাতে না। কোন অনুষ্ঠান বা বিজ্ঞাপন সমাপ্ত বাহিনী ও আইন শূক্ঙলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের কটাক্ষ করে কোন দৃশ্য বা বক্তব্য প্রকাশ করা যাবে

No comments

Powered by Blogger.