টিভি সাংবাদিকতা বনাম অপসাংবাদিকতা । Broadcast Journalism
টিভি সাংবাদিকতা বনাম অপসাংবাদিকতা
মালিকানা ও মিডিয়া পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। যদি মালিকদের মধ্যে পেশাদারিত্ব বোধের অভাব থাকে তবে তার শতভাগ প্রভাব পড়বে সাংবাদিকতায়। কিছু কিছু সাংবাদিকদের বেতন হবে আকাশছোঁয়া । তারা চ্যানেল দাঁড় করে দেবার কথা বলে নিজেদের সম্পদ যেমন বাড়িয়ে নেবেন তেমনি জুনিয়র কর্মীদের স্বাস্থ্যহানী ঘটাবেন এটা ঘটা করে বলা যায়।
এখানে গণমাধ্যমের স্বাধীন কোন স্বত্তা থাকে না। দৃশ্যত যে গনমাধ্যম ক্ষমতা আমরা দেখি তার অন্তরালে রয়েছে পুঁজির রাজনৈতিক -সামাজিক শক্তি । এখন মালিক ও মুনাফার স্বার্থে গণমাধ্যম কথা বলে অন্যদের কথা বলায়।
গত দুই দশক বাংলাদেশে গণমাধ্যম এবং এর মালিকানার ধরণ পুরোপুরি বদলে গেছে। রেডিও, টিভি বা সংবাদপত্রের মালিক হচ্ছে কোন রাজনৈতিক দল,ব্যবসায়ীক গোষ্ঠী বা গ্রুপ অব কোম্পানি। কোন মহৎ উদ্দেশ্যে মহান এ পেশায় অবদান রাখা বা সমাজের উন্নয়ন ,সমাজের মানুষগুলোর উন্নয়নের চিন্তায় নয় বরং মুনাফা অর্জন, রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ কিংবা কোম্পানির অন্য ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে বের হচ্ছে নতুন নতুন সংবাদপত্র এবং টিভি চ্যানেল। গণমাধ্যম নিজেই পরিণত হয়েছে গ্রুপ অব কোম্পানিতে।
গণমাধ্যমের শক্তিকে রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে ব্যবহার করার জন্য গণমাধ্যম মালিকানায় চলে আসে রাজনৈতিক লোক। জোট সরকারের আমলে ৭/৮টি বেসরকারী স্যাটেলাইট চ্যানেল অনুমোদন পেয়েছে। আর সরকার মহাজোট সরকার আরো ১২টি নতুন বেসরকারী চ্যানেল অনুমোদন দিয়েছে।
প্রত্যেক চ্যানেল এর মালিকানায় রয়েছে মন্ত্রী,সাংসদ, ও তাদের বন্ধু -বান্ধব । একটু চিন্তা করলেই দেখা যায, এ টিভি চ্যানেলগুলোর মালিকানায় কেন বেছে বেছে নিজ দলের বা পছন্দের লোকদের অনুমোদন দিয়েছে বর্তমান ও অতীতের সরকার।
Know More……..টিভি সংবাদ তৈরির কৌশল
মানুষ প্রত্যাশা করে সরকারী, বেসরকারী, বহুজাতিক বা ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান যাদের কাজের সাথে জনগণের স্বার্থ জড়িত গণমাধ্যম তাদের কাজের উপর নজরদারি রাখবে । জনবিরোধী, অন্যায়, অনিয়ম দুনীতি হলে সেসবের সমলোচনা করবে। মিডিয়াকে তাই আই অন গভর্নমেন্ট ‘বলে।
কিন্তুু বাংলাদেশের মিডিয়া মালিকরাই যদি মুনাফা আর দলীয় সমাচারের উদ্দেশ্য মিডিয়াকে ব্যবহার করে তাহলে মিডিয়া কি ভাবে আই অন গভর্নমেন্টের গুরু দায়িত্ব পালন করবে।
তাই চ্যানেলগুলোেকে মালিকদের প্রভাব, রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত করতে সরকারকে একটি চুড়ান্ত নীতিমালা প্রণয়ণ করে সাংবাদিক ও মিডিয়ার স্বাধীনতার নিশ্চিয়তা দান করা প্রয়োজন।
No comments