লেআউট প্রকারভেদ ও কলাকৌশল । Layout Types and Techniques
লেআউট প্রকারভেদ ও কলাকৌশল
লে- আউট প্রকারভেদ
ভার্টিকাল লেআউট
সবচেয়ে পুরনো লে আউটের মধ্যে পড়ে ভার্টিকাল লে আউট বা খাড়া লে আউট। পাতার শৃঙ্খলা আনার সহজে উপায়। আগেকার সময়ে প্রতিটি নিউজে সাজানো হত।তারপর কলাম রুল দিয়ে পরপর বসানো হত।এরকম একখেয়ে ও একই ধরনের হেডিং এর জন্য যথাযথভাবে তার ডিসপ্লে হত না।তবে আজকাল ভার্টিকাল লে আউট অনেক উন্নত হয়েছে। এর বড় সুবিধা হল অর্থ স্বার্থে অনেক নিউজ দেয়া যায় যাতে কাগজকে অনেক সংবাদ বহল মনে হয়।
হরাইজেন্টাল লেআউট
এটি পাতার শৃঙ্খলা আনার একটি সহজ উপায়। এতে বিভিন্ন পয়েন্টে আটকলার করে হেডিং,দিয়ে পাতার উপরের দিক থেকে ক্রমান্বয়ে নীচের দিকে নামা হয়।অবশ্যই এতে প্রতিটি নিউজ গুরুত্ব পায়।এর বড় দোষ হল পাতার প্রথমার্ধে দু-একটির বেশী জরূরী নিউজ দেয়া সম্ভব হয় না।পাতাটা বক্রের মত কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে যায় এই পদ্ধতির সুবিধা হল দীর্ঘ স্টেরিকে ছোট দেখায়। কাগজটি ভাঁজ করে পড়া যায়। এটি এখন ব্যবহার হয় না।
সিমেট্রিকাল লেআউট
বিশৃঙ্খল পাতায় শৃঙ্খলা আনার জন্য ভালোই কাজ দেয়। পাতাটি একটি আয়তক্ষেত্র বলে এর অপটিকাল সেন্টার হবে মাঝামাঝি। একটি অঙ্কের চতুর্দিকে সমভাবে ভাব সৃষ্টি করে ও একটি প্রতিসাম্য রচনা করে পাতার মাঝামাঝি অপর্টিকাল সেন্টার গড়ে তোলাই এর লক্ষ্য।
এ্যাসিমোট্রিকাল লেআউট
কতগুলো অসম দৃশ্য উপাদানকে সুবিন্যস্ত করে পাতার ভারসাম্য আনাই এই পদ্ধতির বৈশিষ্ট। এ ধরনের লে আউট গোটা পাতার একটি গতিময়তা ও আলোড়ন সৃষ্টি করে। বড় টাইপের একটি হেডলাইন বা একটি বড় আকর্ষীনীয় ছবিকে কেন্দ্র করে তার চারপাশে ছোট উপাদান এমনভাবে সুবিন্যস্ত করা যাতে গোটা পাতা একটি অখণ্ড রূপসা করে উপাদান বলতে এখানে কালো ও ধূসর রং এর আধিক্য।
লে আউটের কলাকৌশল
উইনডো ডিসপ্লে
দোকানের ভাল জিনিস যাতে ভোক্তার চোখে পড়ে সেজন্য তা বাহিরে টাঙ্গিয়ে রাখা হয়। দোকানে এভাবে কাঁচের দেওয়ালের মধ্যে পণ্যদ্রব্য সাজিয়ে রাখাকে বলা হয় ‘উইনডো ডিসপ্লে । খবরের কাগজের প্রথম পাতাটি উইনডো ডিসপ্লে । খবরের কাগজের সম্পাদকীয় নীতি, তার বিষয় বস্তুু, কাগজের চরিত্র সবই প্রকাশ পায় প্রথম পাতায়। এভাবে সাজানো বা সন্নিবেশ করাকে বলা হয় মেক আপ, আর যে অঙ্কিত রূপরেখা দেখে নিউজ সুবিন্যস্ত করা হয় তাকে বলা হয় লে আউট। প্রথম পাতার ডিসপ্লে তাই গুরুত্বপূর্ণ।
হঠ্যৎ কেউ পারে না
হঠাৎ কেউ লে আউট করতে পারে না। এই টেকনিক্যাল কাজটি শিখতে হয়।ভালো ইচ্ছা থাকলে তাড়াতাড়ি শিখা যায়। যেকোনো টেকনিকাল কাজের মত এ বিষয়ে বেশ কিছু টেকনিকাল শব্দ আছে, যা বিশেষ অর্থে ব্যবহৃত হয়।
কতগুলো উপকরণ
লে আউট করতে গেলে কতগুলো উপকরণ লাগে। যেমন – ডামি শিট।ডামী শিটে ঠিক করে নিতে হবে কোথায় হেডলাইন হবে, কোথায় ছবি থাকবে, কোথায় বিজ্ঞাপন থাকবে, আর লাগবে পেন্সিল অথবা মার্কার। এটা লাল ও কালো দু’ রং এর হলে ভাল।
আগে বিজ্ঞাপনের মাপ
সবচেয়ে আগে যেটা জানতে হবে, সেটা হলে বিজ্ঞাপনের মাপ।কেননা এটা বিজ্ঞাপন বিভাগের নির্দেশ অনুযায়ী নির্দিষ্ঠ জায়গায় বসাতে হবে।
একটি লেআউট
এবার হল সিদ্ধান্ত নেয়ার পালা।কাগজেই প্রথমাংশে আপনি কি কি দিতে চান তা আগেভাগেই ঠিক করে নিতে হবে। বিজ্ঞাপন নড়ানোর সুযোগ নাই।
আরো জানুন………. পৃষ্ঠাসজ্জা কি ? পৃষ্ঠাসজ্জার গুরুত্ব ও উদ্দেশ্য
লে আউটের শেষ কথা
যে কোন পাতার লে আউট সম্পর্কে শেষ কথা হল তা কথাপযোগী হতে হবে। আর তা করতে কয়েকটি নীতি মেনে চলতে হবে- লে আউট থাকবে বিশৃঙ্খলা এবং গুরুত্ব প্রকাশের ব্যবস্থা প্রত্যাশিত নিউজ প্রত্যাশিত অবস্থা থাকবে। স্থানের অপচয় বা অপব্যবহার করা যাবে না। গোটা পাতাই যেন সুবিন্যস্ত ও উপযোগী হয়। লে আউট করার জন্য দরকার সর্তক চোখ ও সৌন্দর্যবোধ একটি সুন্দর লে আউট যেমন নান্দনিক, অন্যদিকে তেমনি কার্যোপযোগী। চর্চা ও অভ্যাসের মাধ্যমে আয়ওে আনতে হবে।
লেখক : আনোয়ার হোসেন
যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
No comments