গরীবের নায়ক সাকিব খান ও বাংলা ছবি । cajacademy.com

মো. তারেক হোসাইন

গরীবের নায়ক সাকিব খান ও বাংলা ছবি

ক বছর মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারে তাকে উপস্থাপক জিজ্ঞাস করেন, আচ্ছা সাকিব ভাই, অনেকে বলেন আপনার ছবিতো বর্তামান ইয়াং জেনারেশন দেখেন না। এ ক্ষেত্রে আপনার কেমন লাগে?

তিনি তখন ঐ মঞ্চে দাড়িয়ে তাৎক্ষণিক জবাব দেন , “আমার ছবি বর্তমান ছেলে মেয়েরা দেখেন না। এক্ষেত্রে আমার কোনো দুঃখ অনুভব হয় না। আমার ছবি যারা দেখেন তারা হল ক্ষেত খামারের কৃষক, কুলি আর রিক্সার ড্রাইবারের মত লোক। তারা যখন সারাদিন পরিশ্রম করে এসে চায়ের দোকানে বসে আমার ছবি দেখে বিনোদিত হন। তখন আমার কষ্টের আমি প্রকৃত সুখ পাই। আমার কাজের অনুপ্রেরণা পাই।”

সাকিব খান

সত্যিই তো! এখন যদি আমি একজন রিক্সাওয়ালাকে জিজ্ঞাস করি আপনার প্রিয় নায়ক কে? তিনি উত্তর দিবেন –সাকিব খান। আমি যদি এখন একজন কুলিকে জিজ্ঞাস করি, আপনার প্রিয় নায়ক কে? ওনিও হয়তো বলবেন –সাকিব খান। কারণ এ খেটে খাওয়া মানুষগুলো যে সাকিব খান ছাড়া আর কাউকে চেনেন না!

দীর্ঘ ১০ বছর ধরে সাকিব খান বাংলাদেশের এক নম্বর নায়ক হিসাবে পরিচিত। তার অভিনয়ের সুনাম এ বাংলা ছাড়িয়ে ওপার বাংলায়ও এখন শোনা যায়। কলকাতার নায়িকা শ্রাবন্তির সাথে শিকারি ও বসগিরি ছবি করে ওপার বাংলায় জনপ্রিয়তা লাভ করেন সাকিব।

এই খেটে খাওয়া মানুষগুলো চেনেনা হলিউডের লিওনার্দো ডিকাপ্রিওকে, টম হেন্কসকে, ব্রাড পিটকে কিংবা জেমস বন্ড খ্যাত ডেনিয়েল ক্রিজকে। তারা দেখেন না হলিউডের মুভি। ধারণ করেন না পশ্চিমা সংস্কৃতি। যেখানে আমরা নিজের সংস্কৃতি ভুলে গিয়ে পশ্চিমা সংস্কৃতি ধারণ করছি।

তারা চেনেন বাংলার নায়ক সাকিব খানকে। তার ছবি দেখে অনেক সময় হাসেন। অনেক সময় কান্না করেন। এ যুগে যখন মাল্টিমিডিয়া জেনারেশন ব্যস্ত বলিউড কিংবা হলিউডের মুভি দেখতে। ঠিক সে সময় ব্যস্ত থাকে বাংলার খেটে খাওয়া মানুষগুলো সাকিব খানের মুভি দেখাতে। কিছুটা আনন্দ খুঁজে সাকিব খানের মুভি থেকে।

এ জেনারেশনের এখন সময় হয় না বাংলা ছবি দেখতে। অনেকে হয়তো বলবেন, বাংলা ছবিগুলো অধিকাংশই কপি করা অথবা বর্তমান জেনারেশন যেভাবে বাংলা ছবি চায় সেভাবে তৈরি হচ্ছে না। কিন্তু আমরা কি এটা ভেবে দেখেছি? আমরা এটা নিয়ে কি একবারও প্রতিবাদ জানিয়েছি কিংবা সোচ্চার হয়েছি? না! উল্টো ছবির কোনো একটা অংশ ভুল হলে ফেইসবুকে বসে বসে আমরা তার চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করি।

সাধারণত বাংলাদেশে একটা ছবির যে বাজেট ধরা হয়, তা শুধু ইন্ডিয়ার একটি ছবির আইটেম গানের জন্যও ব্যয় হয়। ছবির বাজেট সংকট, টেকনোলজি সংকটসহ বিভিন্ন সমস্যা বাংলাদেশের সিনেমা পাড়ায় দেখা যায়।

এত অপ্রতুলতা সত্ত্বেও এ খেটে খাওয়া মানুষের নায়ক অভিনয় করে যাচ্ছেন। তিনি চাইলে এ পেশা ছেড়ে বিদেশে গিয়ে বিলাসী জীবন যাপন করতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা করছেন না। চেষ্টা করছেন অভিনয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের সংস্কৃতিকে বহির্বিশ্বে তুলে ধরার জন্য।

তাই এ গরীবের নায়ককে সেলুট জানাই।

লেখক : শিক্ষার্থী

২৩ তম ব্যাচ
আইডি: ১৭৪০৭০৭৯

যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

No comments

Powered by Blogger.