যোগাযোগ শঙ্কা কী। What is Communication Apprehension
যোগাযোগ শঙ্কা Communication Apprehension
একজন মানুষের যোগাযোগ করার ইচ্ছা থাকতে হয়। কোন বিশেষ দিনে আমি কারো সাথে কথা বলতে চাই। আবার আমি কখন, কোথায়, কীভাবে কার সাথে যোগাযোগ করব এটা ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল।
ইচ্ছা পারিপ্বার্শিকতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। ইচ্ছা নানা চলক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। আন্তঃব্যক্তিক পরিমন্ডলে একজন বেশি কথা বললে আর একজন কম কথা বলে। এটি চলক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এ চলককে বলা হয় Apprehension বা শঙ্কা।
যোগাযোগ শঙ্কা বলতে বুঝায় যোগাযোগে অংশ নেয়ার ভীতি, অস্হিরতা, উদ্বেগ, দ্বিধা । অর্থাৎ, যোগাযোগ করতে একজন মানুষ কতটা ভয় পায়। যোগাযোগ শঙ্কা উৎস ও প্রাপক দুই দিক থেকেই হতে পারে। যোগাযোগশঙ্কা সবার মধ্যে কাজ করে বলে এটি যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
শ্রোতার চিন্তাভাবনা এবং নিজের ভাবমূর্তি বজায় রাখতে মানুষের মধ্যে এ ধরনের ভীতির উদ্রেক হয়। যোগাযোগ শঙ্কাকে ইংরেজীতে Communication Apprehension বা সংক্ষেপে CA বলা হয়৷
যোগাযোগের বিভিন্ন ধরন যেমন- আন্তঃ ব্যক্তিক যোগাযোগ, দলীয় যোগাযোগ, জনযোগাযোগ ও গণযোগাযোগ- এ চার ধরনের যোগাযোগেই শঙ্কা দেখা যায়।
উদাহরণস্বরূপ,
ক্লাসে প্রেজেন্টেশন চলাকালীন, মাইক্রোফোন হাতে আমাদের অনেক বন্ধুরই হাঁটু কাঁপাকাঁপি শুরু হয়। এটি যোগাযোগ শঙ্কারই বহিঃপ্রকাশ। আবার, নিজের পছন্দের মানুষটিকে গোলাপ হাতে ভালোবাসার কথা জানাতে গিয়ে অনেক সময় ঘর্মাক্ত হয়ে তোতলাতে তোতলাতে ফিরে আসতে দেখা যায় সুঠামদেহী নায়ককে। এগুলো Communication Apprehension এর বাস্তব উদাহরণ।
যোগাযোগ শঙ্কার সংজ্ঞা দিতে গিয়ে James Mccrosky এবং Daly তাদের Personality and Interpersonal communication যোগাযোগ শঙ্কা
( Communication Apprehension)
Know More…আন্তব্যক্তিক দ্বন্দ্ব কী | আন্তব্যক্তিক সম্পর্কে কেন দ্বন্দ্ব সংগঠিত হয়?
কে দুইভাগে ভাগ করেছেন-
১। অবধারনাগতভাবে:
Communication Apprehension is a fear of engaging in communication transaction.
যোগাযোগে অংশগ্রহণ করলে তার ফলাফল নেতিবাচক হবে অথবা শ্রোতা নেতিবাচক ধারণা পোষণ করবে। অর্থাৎ যোগাযোগে অংশগ্রহণের পূর্বেই উৎসের মনে যে ভীতি কাজ করে সেটাই অবধারণাগত শঙ্কা
২। আচরণগত শঙ্কা
Communication Apprehension is a decrease in frequency engaging in communication transaction.
সমাজে কিছু মানুষ আছে যারা অন্তর্মুখী স্বভাবের। ফলে যোগাযোগ করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে এবং যতদূর সম্ভব যোগাযোগ প্রক্রিয়া এড়িয়ে চলেন।
James Mccrosky তার Avoiding Communication গ্রন্হে বলেছেন-
যোগাযোগশঙ্কা হচ্ছে একজন ব্যক্তির অন্য ব্যক্তি বা ব্যক্তি সমষ্টির সাথে যোগাযোগে অংশ নেয়ার ভীতি বা অস্হিরতার মাত্রা।যোগাযোগ হতে পারে বাস্তব বা অনুমিত।
যোগাযোগবিদ James Crosley এবং Lowrence Wheels তাদের Introduction to Human communication গ্রন্হে বলেন-
বর্তমান সময়ে আমেরিকান জনগণের মধ্যে যে যোগাযোগ প্রতিবন্ধকতা কাজ করে তা হলো যোগাযোগ শঙ্কা।
ম্যাক্রসকির মতে, যে ধরনের চিন্তা বাস্তব অথবা অনুধাবনগত যোগাযোগ আচরণে দুশ্চিন্তা বা ভীতির উদ্রেক করে সেগুলোকে যোগাযোগ শঙ্কা বলে।
যোগাযোগশঙ্কা একটি স্বাভাবিক বিষয়। সকল যোগাযোগ পরিস্হিতিতে শঙ্কা কাজ করে। যোগাযোগ শঙ্কা সময় ও স্হানভেদে ভিন্ন হয়। কখনো শঙ্কার মাত্রা বেশি হয় আবার কখনো শঙ্কার মাত্রা কম হয়।
যোগাযোগ শঙ্কার নেতিবাচক দিকের পাশাপাশি ইতিবাক দিকও রয়েছে।
শঙ্কা না থাকলে আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গুরুত্ব দিতে চাই না। এজন্য লক্ষ্য রাখতে হবে শঙ্কা যাতে কাক্ষিত পর্যায়ে থাকে।
যোগাযোগশঙ্কা বেশি থাকলে যোগাযোগ কম হয় এবং শঙ্কা কম থাকলে যোগাযোগ বেশি হয়।
লেখক : শিক্ষার্থী
এমএসএস, ২১ তম ব্যাচ
যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
No comments