প্যানপটিকন ও সিনোপটিকন । Panopticon and Synopticon

Marjan Akter

প্যানপটিকন ও সিনোপটিকন । Panopticon and Synopticon


প্যানপটিকন : Panopticon 

 ফরাসি দার্শনিক Michel Foucault  বলেছেন, প্যানপটিকন একটি কাল্পনিক মেশিন যা ১৯৯১ সালে Jeremy Bentham  তৈরি করেছেন  । কারাগারে কয়েদিদের নজরদারি করার জন্য এই অদ্ভুত যন্ত্রের ব্যবহার করা হবে । যার ফলে কয়েদিরা নিজ থেকেই সতর্ক থাকবে । যার ফলে আলাদা অতিরিক্ত প্রহরীর প্রয়োজন হবে না ।

 প্যানপটিকন হলো অধিক সংখ্যাক মানুষের প্রতি স্বল্প সংখ্যকের নজরদারি ।


সিনোপটিকন : Synopticon

Thomas Mathiesen  এর সৃষ্ট শব্দ । যার দ্বারা বোঝায় স্বল্পের প্রতি একাধিকের নজরদারি । আমরা সেলিব্রেটিদের উপর যেভাবে নজরদারি করি তাই সিনোপটিকন ।



প্যানোপটিকনের সৃষ্টি শুধু কয়েদিদের জন্য করা হলেও বর্তমানে সমাজের সব জায়গায় এটি দৃশ্যমান ।যেমন- সিসিটিভি ক্যামেরা । ক্যামেরা প্রতিনিয়ত নজরদারি করছে । আমাদের হাতে থাকা ডিভাইসের কারণেই আমরা প্যানোপটিকনের আওতায় চলে আসছি ।

 Zigmund Bauncan এর মতামত - 

শিল্পযুগে প্যানপটিকনের ব্যবহার মালিক শ্রমিক অসামঞ্জস্যতা সৃষ্টি করেছিল   । বর্তমানেও প্যানপটিকন রয়েছে বরং আরো জোরদার । তবে সিনোপটিকনকে সাধারণত ভাবতে গিয়ে প্যানপটিকনকেও একই কাতারে ফেলে দেই । গণমাধ্যমের হাত ধরে এই বিষয়গুলো আরো স্বাভাবিকে পরিণত হচ্ছে ।


তবে নয়া মাধ্যমের কারণে নতুন এক ধরনের নজরদারির উদ্ভব হয়েছে । অধিক সংখ্যকের উপর অধিক সংখ্যকের নজরদারি । এটি হয়ে থাকে ফেসবুক বা টুইটারে একে অন্যের সাথে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে ।  লাইক-কমেন্ট করার মাধ্যমে ।

Big Brother is watching You' উপন্যাসের মেটাফোর বাস্তবে রূপলাভ করেছে । এইসব নজরদারির তথ্য শুধুমাত্র উদ্দেশ্য নয় বরং ক্রয়-বিক্রয় ও হয়ে থাকে । জেনে না জেনে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হয় ।এখানে বলা হয়ে থাকে শুধুমাত্র ইতিবাচক নজরদারির জন্য  তথ্য নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এইসব তথ্যের বিশাল সংগ্রহ শালা করা হয় । এখান  থেকে ডাটা ক্রয়-বিক্রয় করে ।


কিভাবে নজরদারি করা হচ্ছে


১. অ্যাপস বা সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে

২ . সামাজিক যোগাযোগ সাইট গুলোতে দেওয়া তথ্য থেকে

৩. অনলাইনে ব্যক্তিগত তথ্য প্রদান করলে তা থেকে

৪. ডেবিট কার্ড ক্রেডিট কার্ডেএর তথ্য থেকে

৫. অনলাইন কেনাকাটার তথ্য থেকে 

৬. বিল্ডইন স্পাইওয়ার সফটওয়্যারের মাধ্যমে


নজরদারির ফলে যা হচ্ছে :

 ১. নিরাপত্তা হ্রাস পাচ্ছে

২. গোপনীয়তা ক্ষুন্ন হচ্ছে

৩. নিজের অজান্তেই পণ্য হয়ে যাচ্ছি 

৪. ব্যক্তিগত তথ্যের ঝুঁকি বাড়ছে

৫. রাজনৈতিক দলের কাছে তথ্য যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে 


লেখক : শিক্ষার্থী, ৪র্থ বর্ষ (২৪ তম ব্যাচ)

যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

No comments

Powered by Blogger.