দাসপ্রথা, সামন্ততন্ত্র, পুঁজিবাদ | Slavery, Feudalism, Capitalism

দাসপ্রথা,সামন্ততন্ত্র, পুঁজিবাদ

এঙ্গেলস বলেছেন – দাসপ্রথা আবিষ্কার হয়েছিল এথেন্সে। অবসরইআবিষ্কারের পূর্বশর্ত।

পুঁজিবাদের শুরু হল ১৭ শতকের শেষের দিক থেকে ১৮ শতকের শেষ‍দিক পর্যন্ত। এই সময়টা পুঁজিবাদের গর্ভকাল।

পুঁজিবাদী মনস্তত্ত্ব নির্মানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণভূমিকা পালন করে  রাষ্ট্র, গণমাধ্যম, শিক্ষাও ধর্ম। আর এগুলোর প্রথম প্রকাশ ঘটে ব্যক্তির সামাজিক আচরনে। এই সামাজিক আচরনের গুরুত্বপূর্ণজায়গা হচ্ছে ভাষা। কিছু মাধ্যমে সংস্কৃতি প্রকাশ পায় সেগুলো হল রাষ্ট্র, ধর্ম, গণমাধ্যম,‍শিক্ষা।

পুঁজিবাদ বিকাশের সাথে কৃষির সম্পর্ক ছিল। বর্ধিত পুনরোৎপাদনথেকে পুঁজির উদ্ভব।

দাসপ্রথা
দাসপ্রথা

লেলিন বলেছেন- পুঁজিবাদ বিকাশের ক্ষেত্রে বর্ধিত পুনরোৎপাদনেরপ্রয়োজন আছে। এই বিকাশের সাথে পুঁজি, শ্রম ও উৎপাদিত পণ্যের মধ্যে নির্ভরশীল সম্পর্কআছে।

পুঁজি, শ্রম ও উৎপাদনের মাত্রা পরস্পর ‍নির্ভরশীল। সেইথেকে আমরা পুঁজির বিকাশ দেখতে পাই সামন্ততান্ত্রিক পর্যায় থেকেই।

পুঁজি, শ্রম ও উৎপাদনের মাত্রাকে বিপ্লবের পর্যায়ে ‍নিয়েযেতে অন্যতম অনুঘটক ছিল কয়লা। এর মধ্যে দিয়ে শক্তির ব্যবহার নিশ্চিত হয়।

ঐতিহাসিক জ্ঞানচর্চার ভিত্তিমূল ছিল ধর্মতত্ত্ব। এই ধর্মতত্ত্বপালনের মুখোমুখি হয়েছে যুক্তি দ্বারা কিন্তু

’বিদ্যমান ভারসাম্যকে আমূল পাল্টে দেয় এরকম যেকোন কিছুইবিপ্লব।

 Economic     Product       Advancement of Poduction

                   By Product   (A+I)Education System

কৃষিতে ধ্রুপদী পুঁজিবাদে বিকাশের প্রাথমিক মডেল হল যুক্তরাজ্য।বৃহত্তর ভারতে কৃষির ইতিহাস হল ১৮৬০-১৯৩০ সাল।

বাংলাদেশে পুঁজির বিকাশ

  • শিল্পের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় ভর্তুকি গার্মেন্টসশিল্প
  • মধ্যপ্রাচ্যে জনশক্তি রপ্তানি পুঁজির গনীভবন

নব্য উদারবাদী অর্থনীতিতে বাংলাদেশ প্রবেশ করে ১৯৮০’র দশকেরসালের দিকে। বেশ কিছু পর্বের মাধ্যমে এটার বিকাশ ঘটে।

১ম পর্ব ছিল ১৯৭২ সালে ।

ব্রেটন উড্স চুক্তির মাধ্যমে আইএমএফ গঠিত হয়। বিশ্বব্যাংকেবাংলাদেশের শেয়ার ০.৩২শতাংশ। আর ভোটিং পাওয়ার ০.৩১ শতাংশ। কিন্তু ভোটাধিকার প্রয়োগেরক্ষেত্রে প্রকৃত অধিকারের চেয়ে সুযোগ কম।

১৯৭২-১৯৮৬ সাল। এই সময়ে IMF ও WB বাংলাদেশের অর্থনীতিতেবেশ কর্তৃত্ববাদী হতে শুরু করে।

এ সময়ে ১৩ টি প্রকল্পের ক্ষেত্রে আমদানির সুবিধার্থে বাংলাদেশঋণ গ্রহণ করত।যদিও তখন WB ও IMF বেশি ফাঁপরবাজি করতে পারে নাই।

২০০০ সাল পর্যন্ত IMF ও WB থেকে ঋণের পরিমাণ ছিল ৭৫২৪ মিলিয়নমার্কিন ডলার। সবগুলো ঋণ ছিল শর্তযুক্ত। বাংলাদেশের নীতি-প্রকল্প-ধারণা প্রভাবিত হয়ঋণের শর্ত দ্বারা।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ব্রেটন – উডস চুক্তির অর্থনৈতিকনীতির প্রধান উদ্দেশ্যই ছিল যে কোন রাষ্ট্রের দায়িত্ব ও কর্তব্যের সংজ্ঞায়ন পরিবর্তনও ঠিক করে দেয়া।

  • বাংলাদেশেএর কিছু প্রভাব ও ফলাফল

১৯৯৭-২০০৭ সাল পর্যন্ত স্ট্রাকচারাল এডজাস্টমেন্ট প্রজেক্টচলার সময় ১৯৯৭ সালে ৫.১ কোটি লোক দারিদ্রসীমার নীচে চলে গেল। ২০০৭ সালে দারিদ্র্যেরহার ২০ শতাংশ বেড়ে হল ৬.১ কোটি। পুঁজি বা সমৃদ্ধ সম্প্রদায় তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এই সম্প্রদায়মাত্র ১০ শতাংশ।

[উপরের আলোচনা হল বাংলাদেশে পুঁজিবাদের উন্নয়ন কিভাবে কতটুকুহল তা ]

  • আধুনিকায়নস্কুল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রেক্ষিত

বাংলাদেশ, মালেশিয়া, সোজা কথায় যে পরিমাণ দেশ ব্রিটিশ কলোনীথেকে স্বাধীনতা লাভ করে সেগুলোর শুরুটা হয়েছে পুঁজিবাদের মধ্য দিয়ে।

১৮৭৫ সালের আগ পর্যন্ত বেলজিয়াম,ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন,সুইজারল্যান্ড,ব্রিটেন, নেদারল্যান্ডস এই দেশগুলো পুরো বিশ্বটাকে চালাত।

দুটো কারণে

  1. ১৭৬২সালের শিল্প বিপ্লব
  2. ১৭৮৯সালের ফরাসী বিপ্লব।

মূলত পুঁজিবাদী ম্যাচ জেতার কৌশলপত্র হল আধুনিকায়ন স্কুল।৫০ এর দশকে প্রথম আধুনিকায়ন স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়।

আধুনিক পুঁজিবাদের কারণ হল-

 ১. ইউরোপের পতন

 ২. বিকল্প পুঁজিবাদীশক্তি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ভব।

মূলত মার্কিন নীতি দ্বারাই আধুনিকায়ন স্কুল পরিচালিত হত।

কারণ –

 ১. রাশিয়ার সমাজতান্ত্রিকমডেল কে অকার্যকর প্রমাণ করার জন্য।

 ২. ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত(GDP) জিডিপি ই ছিল উন্নয়নের প্রধান নির্ধারক।

  • আধুনিকায়নস্কুলের দর্শনগত ভিত্তি/রূপ

আধুনিকায়ন স্কুল দুটো দর্শনগত ডিসকোর্সের মিশ্রণ

১.Evolutionary thesis

২.Functional thesis

  • ModernizationSchool
Evolutionary UnudirectionalJudgementalEvolution Functional
  • Evolutionarythesis

এই তত্ত্ব সামাজিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে একাডেমিক আলোচনায়আসে ২০ শতকে। যদিও তার শুরু হয়েছিল ১৯ শতকে। এর আগে এটি কেবল প্রাণী বিদ্যায় ব্যবহৃতহত।

সামাজিক বিজ্ঞানে এই তত্ত্ব আসার ও কারণ দুটো

 ১. শিল্প বিপ্লব১৭৬২সালে

 ২. ফরাসী বিপ্লব১৭৮৯ সালে

সমাজ শিল্প বিপ্লব ও ফরাসী বিপ্লব পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্যযে পদ্ধতিতে আয়োজন ছিল তা বিবর্তনমূলক ও দীর্ঘমেয়াদি। দুটো বিপ্লবের পূর্বে সমাজ ছিলসম্প্রদায় ভিত্তিক।

ঐ সম্প্রদায়ে ছিল যান্ত্রিক সংহতি। খুনকা বদলা খুন নীতিতেচলত। সবাই একসাথে মিলেমিশে গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে থাকত। আমার ভাইকে মারছো, তোমার ভাইকে মেরেদিলাম সবাই পিঁপড়ার মত একসাথে দৌঁড়াতো।

ফরাসী বিপ্লবের পর সমাজে আসলো জৈবিক সংহতি। আধুনিকায়ন স্কুলেরতাত্ত্বিকরা সমাজ পরিবর্তনকে তিন বৈশিষ্ট্যে রূপ দিয়েছেন

 ১.Unidirectional

সমাজের পরিবর্তন এক রৈখিক। সমাজ উন্নতি করলে কেবল উন্নতিরদিকেই যায়। পেছনের দিকে আসার সুযোগ নেই।

 ২. Judgmental

সমাজের পরিবর্তন সবসময়ই ভালো ও প্রতিবাদী। যা নতুন কিছুগ্রহণের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায়।

 ৩.Evolutionary

সমাজের পরিবর্তন আসে বিবর্তনবাদে।

  • FunctionalistThesis

এই ধারনার ভিত্তিটা নির্ভর করে টালকট পারসন্স এর তাত্ত্বিকদৃষ্টিভঙ্গির উপর। ট্যালকট পারসন্স (১৯৫০) এর তত্ত্ব। যে আলোচনার ভিত্তিতে পারসন্সআধুনিক ও ঐতিহ্যবাহী সমাজকে পার্থক্য করেছেন তা হল

১. System

২. AGIL

৩. Equilibrium

৪. Pattern Variable

Traditional Modern
Affective Non affective
Particularistic Universalistic
Collective Self oriented
Ascription Achievement
Diffused Specific

উপর্যুক্ত ৪টি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বৃহৎ আঙ্গিকে সমাজ কে দেখারজায়গা। পারসন্স বলেছেন – সমাজ হচ্ছে একটা ব্যবস্থা যার ভিত্তি হল জীববিদ্যা।

  • আধুনিকায়নস্কুলের মূল ভিত্তি হচ্ছে

  ১. Functionalthesis

  ২. Evolutionary thesis

আর এই দুটোর সহযোগী তিনটি দৃষ্টিকোণ হচ্ছে

 ১.Sociological

 ২. Political

 ৩. Economical

এই তিনটি দৃষ্টিকোণ দিয়েই আধুনিকায়ন স্কুল কে বিবেচনা করাহয়। অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণে রস্টো, রাজনৈতিক কোলম্যান, সমাজতাত্ত্বিকে লেভী ও স্মেলসারএর আলোচনা বিবেচনায় আনা হয়েছে।

ষাটের দশকের পুরোটা জুড়েই উনাদের কাজগুলো বিবেচনায় আনাহয়েছে। এখানে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলো বিবেচনা করার ক্ষেত্রে ভেতরে ভেতরে কাজকরেছে সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ।

লেভীর সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ (১৯৬৭) ও স্মেলসারের দৃষ্টিকোণ(১৯৬৪)।

  • সমাজতাত্ত্বিকদৃষ্টিকোণ

লেভীর পুরো কাজটাই কিছু মাত্রায় দর্শনগত। এবং ঘটে যাওয়াবাস্তবতাকে সমাজের আয়নায় দেখা। যেমন – মুক্তিযুদ্ধের সময় ইইন্টারনেট থাকলে আমরা কীকরতাম?

তার মতে, একটি সমাজ আধুনিকতায় প্রবেশ করলো কি, করলো নাতা নির্ভর করে পরিশোধিত শক্তি সম্পদের ব্যবহারের উপর। লেভী বলেছেন এই যে প্রশান্ত মহাসাগরীয়দেশগুলো আছে সেগুলো যদি যুক্তরাষ্ট্র, জাপান বা অপরাপর সমজাতীয় দেশগুলো কাছাকাছি যেতেহয় তবে ১০০ বছর সময় লাগবে। সময়টা শুধু শক্তি সম্পদই না বরং অপরাপর সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোওযুক্ত থাকবে।

প্রত্যেকটা দেশ যখন পরিশোধিত গ্যাস ব্যবহার করতে যাবে তখনতাদের সাংস্কৃতিক মান ও ধীরে ধীরে বাড়তে থাকবে। চেতনাগত, সংস্কৃতিগত, ভোগগত পরিবর্তনওআসবে।

এখানে তিনি লক্ষ্যমুখী দেশ হিসেবে ধরে নিচ্ছেন যুক্ত্ররাজ্য,জাপানকে। এবং মধ্যম সারির হিসেবে ধরেছেন ভারত ও কোরিয়াকে।এরা লক্ষ দেশগুলোর তুলনায়অনেকটা এগিয়েছে। তবে অনেক পথ এগুতে হবে।

কিন্তু,লক্ষ্য অর্জনে প্রধান বিষয় হিসেবে বিবেচিত হবে শক্তিসম্পদের ব্যবহার।

তারপর উনি বলেছেন, আধুনিকায়ন কীভাবে গড়ে উঠবে সে বিষয়ে।এখানে তিনি আধুনিকায়িত হওয়ার একটি মাধ্যমের কথা বলেছেন। তা হলো সংস্পর্শ। অর্থাৎ কোনআধুনিক দেশের সাথে সব ধরনের সংস্পর্শে আসলেই তার পক্ষে আধুনিক হওয়া সম্ভব। এই সংস্পর্শএকটি আধুনিক সমাজকে আধুনিকতার দিকে টেনে নেয়।

এরই ধারাবাহিকতায় একটি আধুনিক সমাজের সাথে ঐতিহ্যবাহী সমাজেরযে পার্থক্যগুলো দেখা দেয়

  • আধুনিকসমাজের বৈশিষ্ট্য

 ১.Specialization of organization.

 ২. Interdependency of organization.

 ৩.Generalized media of exchange and market.

 ৪. Degree ofcentralization.

 ৫.Bureaucracy and family consideration.

 ৬. Jownvillage relationship.

 ১. এই মানদণ্ডগুলোরমধ্য দিয়ে লেভী একটি আধুনিক ও ঐতিহ্যবাহী সমাজের মধ্যে পার্থক্য দেখিয়েছেন।

লেভী বলেছেন, যে কোন আধুনিক সমাজে যেসব প্রতিষ্ঠান থাকে,তাদের যেসব দায়িত্ব থাকে সেখানে বিশেষায়নের মাত্রা বেশি থাকে। আর প্রাক আধুনিক সমাজেরপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিশেষায়ন কম থাকে।

অর্থাৎ ঐতিহ্যবাহী সমাজে বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানের পরিমাণকম। আধুনিক সমাজে বেশি। এবং এদের কাজের পরিমাণও বেশি।

 ২. ঐতিহ্যবাহীসমাজে প্রতিষ্ঠানের পরস্পর নির্ভরশীলতা কম থাকে। অপরদিকে, আধুনিক সমাজের প্রতিষ্ঠানগুলোরমধ্যে পরস্পর নির্ভরশীলতা বেশি। প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান একে অপরের পরিপূরক।

 ৩. আধুনিক সমাজেবিনিময়ের একটি সাধারণ মাধ্যম থাকবে। যেমন – টাকা। কিন্তু, ঐতিহ্যবাহী সমাজে বিনিময়েরমাধ্যমে অনেক কিছুই হতে পারে। যেমন : পানির বদলে দুধ।

 ৪. আধুনিক সমাজেকেন্দ্রীকরণের পরিমাণ বেশি। কিন্তু, ঐতিহ্যবাহী সমাজে কম।

 ৫. আধুনিক সমাজেআমলাতন্ত্রের পরিমাণ বেশি। কারণ, এখানে বিনিময় প্রথা নেই। আর এটা হয় ব্যবস্থাপনার জন্য।প্রতিষ্ঠান বাড়লে সমন্বয় বাড়বে এটাই মূল কথা।

 ৬. আধুনিক সমাজেগ্রাম-শহর সম্পর্কের মধ্যে দৃশ্যমান পার্থক্য দেখা যাবে না। এর একমাত্র কারণ হল পণ্যও সেবার সমপ্রবাহ।

লেভী বলেছেন এই আধুনিকায়নের লাভ আছে। এর ফলে পণ্যের অবাধপ্রবাহ হয়। ঐতিহ্যবাহী সমাজ জানে না তার লক্ষ্য কী। কিন্তু, আধুনিক সমাজ তার লক্ষ্যসম্পর্কে ওয়াকিবহাল।

  • লেভী, এটার একটা সমালোচনা বা সংকটের কথা বলেছেন।আধুনিকতার একটা সংকটের জায়গা আছে। এই যে আমরা নানান মডেলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, কখনোকখনো সেটা নাও ঘটতে পারে। ফলে আমরা হতাশ হয়ে পড়ি।
  • স্মেলসার(১৯৬৪)

Structural differentiation theory

স্মেলসার এর মতে, আধুনিকায়ন হচ্ছে Composition of aunique system. Which is composed of so many different system.

অনেকগুলো কাঠামোর সমন্বয়ে একটা অনুপম কাঠামোই হচ্ছে আধুনিকায়ন।এবং প্রত্যেকটা কাঠামোই স্বতন্ত্র।

স্মেলসার বলেছেন, প্রত্যেকটি সিস্টেমকেই এখানে গুরুত্বদিতে হবে। একটি ছাড়া আরেকটি হবে না। প্রত্যেকটির উপস্থিতি থাকা লাগবে। তা না হলে আধুনিকায়নহবে না।

স্বতন্ত্র সিস্টেম, অনেকগুলো সিস্টেমকে বিবেচনায় নিচ্ছে।নতুন সিস্টেম তৈরি হওয়া এবং পুরনো সিস্টেম সারা যাওয়াকে বিবেচনায় নিবে আধুনিকায়ন।

সীমাবদ্ধতা

এই আধুনিকায়নেরও একটা সংকটের জায়গা হচ্ছে সিস্টেম ম্যানেজমেন্ট।সিস্টেম ম্যানেজমেন্টই বড় চ্যালেঞ্জ। না ম্যানেজ করতে পারলে বড় সমস্যার সম্মুখীন হতেহবে।

  • ধ্রুপদীআধুনিকায়ন তত্ত্বের অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ

ধ্রুপদী আধুনিকায়ন তত্ত্বের –

রস্টো (Rostow)’র অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ অনুসারে বাংলাদেশকোথায় আছে, বিকাশের ঠিক কোন জায়গাটিতে আছে। এই জায়গা থেকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অর্থনৈতিকপরিবর্তনের ক্ষেত্রগুলো দেখব।

রস্টোর উন্নয়ন মডেল ধ্রুপদী মডেল না। তা মূলত নীতিমালাবা পরামর্শপত্র। এবং তা বেশি মাত্রায় পুঁজির উপর নির্ভরশীল।

  • রস্টোরসমালোচনা :

অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সাধারণ ধারনায় বলা হয় – অর্থনৈতিকপ্রবৃদ্ধি হল একটি প্রক্রিয়া। এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তা রৈখিক, একমুখী। অর্থনৈতিক উন্নয়নএকটি প্রক্রিয়া – কিন্তু পুরো আধুনিকায়ন স্কুলে তা ঘটেনি।

উন্নয়ন তত্ত্বের মূল ভিত্তি হচ্ছে মরগ্যানের সমাজ পরিবর্তনএবং ডারউইনের জীববিদ্যাগত উন্নয়ন।

সাধারণত উল্মপণ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় থাকবে না। মার্ক্স বলেছেন,সমাজ প্রধানত প্রগতির দিকে যায়। তবে, পেছনের দিকেও যেতে পারে। এবং উল্মপণ কখনো কাম্যপরিবর্তন হতে পারে না। উল্মপণ কখনো সমাজের স্বাভাবিক প্রগতির প্রবাহ না।

বরং এই উল্মপণ কখনো কখনো সমাজের কাম্য উন্নয়নকে বাধাগ্রস্তকরে।

মার্ক্স আরো বলেছেন, প্রয়োজনের ক্ষেত্রে সীমীত মাত্রায়উল্মপণের প্রয়োজন হতে পারে। ভাবার বিষয় হচ্ছে, কিভাবে এই উল্মপণকে কমানো যায়।

দেখার বিষয় রস্টোর কিভাবে মার্ক্সের উল্মপণের সাথে দ্বিমতপোষণ করছেন। রস্টোর মডেলের মাধ্যমে পুঁজিবাদী ধারার সুশৃঙ্খল পথ তৈরি হচ্ছে।

  • রস্টোরমতে আধুনিকায়নের শর্তগুলো হল

 ১. Massiveindustrialization (ব্যাপক শিল্পায়ন)

 ২. Capitalintensity (পুঁজীর ঘনীভবন )

 ৩. Hugelabour involvement (ব্যাপক মাত্রায় শ্রমিক সম্পৃক্ততা)

 ৪. Growth ofConsumption ( ভোগবৃদ্ধি)

রস্টো বলেছেন, একটা সমাজকে আপনি রাতারাতি কৃষি থেকে শিল্পেনিয়ে যেতে পারবেন। এজন্য দুটো বিষয়ের দরকার।

 ১. বিনিয়োগ

 ২. প্রযুক্তি

রস্টো তাঁর লেখা Development of third world countries: Communist manifesto তে বলেছেন, যদি তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়ন গড়তে চান তবে উৎপাদনেরপুঁজিবাদী প্রক্রিয়ায় যেতে হবে।

রস্টো ১৯৬৪ সালে আধুনিকভাবে তাঁর থিসিসটি উপস্থাপন করেন।তিনি একক সমাজের উন্নয়নের ৫টি স্তরকে চিহ্নিত করেছেন।

 ১.Traditional Society

 ২. Precondition for take off

 ৩. Take off/Beyond pre condition Stage

 ৪. Drive formaturity

 ৫. HighConsumption / Mass consumption Society

  • Traditional society

ঐতিহ্যবাহী সমাজে রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল, ভোগকম, উৎপাদনে প্রাচীন পদ্ধতি ব্যবহার হয়। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো একটি আরেকটির সাথেদুর্বল সম্পর্কে আবদ্ধ। তবে, এখানেও কিছু উদ্বৃত্ত হয়।

  • Pre condition for take off

উন্নয়নের শর্ত হিসেবে শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে, উদ্যোক্তাতৈরি হবে। বাজার বৃদ্ধি পাবে। এই স্তরের উৎকৃষ্ট উদাহরণ নেপাল।

  • Take off

উপরের তিনটি ঘটনা ঘটার পর সমাজে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।এই পর্যায়ের কিছু নির্দেশক নমুনা হল শিশু মৃত্যুর হার কমবে, জীবন রক্ষাকারী ঔষধের ব্যবহারবাড়বে। একই সাথে ভোগ বাড়বে।বাজার বাড়লে উৎপাদনের মাত্রা ও বৈচিত্র্যও বাড়বে। অবকাঠামোখুব বেশি উন্নত হবে না। বৈদেশিক বাজার খুব বেশি বাড়বে না। মূল উৎপাদন হয় স্থানীয় বাজারকেকেন্দ্র করে। জন্মহার বাড়ে। তবে, পরিকল্পিত ভাবে এই জন্মহার বাড়বে না। অর্থনীতিতে উদ্বৃত্তকমবে। শূন্য উদ্বৃত্ত হবে।

  • Beyond precondition

রস্টো বলেছেন, এই স্তরে এসে অর্থনৈতিক পরিবর্তনগুলো শুরুহবে। এখানে এসে রস্টো কিছু মাত্রায় সমাজতাত্ত্বিক ও রাজনৈতিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

রস্টো বলেছেন নীট জাতীয় আয়ের ১০ শতাংশ কে পুঁজিতে রূপান্তরিতহতে হবে। কারণ পূর্বের স্তর থেকে এই স্তরে আসার জন্য ক্রিটিক্যাল ১০% খুবই জরুরি।

এই ১০ শতাংশকে পুঁজিতে রূপান্তরিত করতে অর্থনীতির বাইরেকিছু নিয়ামক থাকবে। এর মধ্যে অন্যতম হল-

 ১. রাষ্ট্রীয় নীতি

 ২. প্রায়ক্তিকবিপ্লব

 ৩. সামাজিক উত্থান

এই ১০ শতাংশই যখন শিল্পে বিনিয়োগে যাবে তখন তা পুঁজি হিসেবেকাজ করবে। বিনিয়োগ হতে হতে কিছু পুঁজি জমা হতে শুরু করবে। এবং এই প্রক্রিয়ায় অবশ্যই১০ শতাংশ সবসময় নিশ্চিত করতে হবে।

রাষ্ট্রীয় নীতির মাধ্যমে যেভাবে ১০ শতাংশ নিশ্চিত হয় এরবড় দুটো উদাহরণ হল –

 ১. জাপান

 ২. রাশিয়া

জাপান এবং রাশিয়া রাষ্ট্রীয় নীতির মাধ্যমে ‘টেক অফ’ পর্যায়েপৌঁছে। তারা দুটো নীতি অনুসরণ করে

 ১. Taxationdevise ( কর বৃদ্ধি)

 ২.Confiscatory (বাজেয়াপ্ত করা)

  • জাপান

জাপান তার কৃষিজ উৎপাদনে লাভের ক্ষেত্রে কর বাড়িয়ে দিল।শিল্পের ক্ষেত্রে কমিয়ে দিল। ফলে, মানুষ কৃষি থেকে শিল্পতে হাটা শুরু করল। একই সাথেশিল্প ও নগর বর্ধনকে সরকার প্রমোট করা শুরু করেছিল।

  • রাশিয়া

রাশিয়া কয়লা খনির বাইরে শিল্পের জায়গায় দীর্ঘসময় আটকে থাকে।তখন রাষ্ট্র ভূমিরাজদের কাছ থেকে অনেক জমি অধিগ্রহণ করে নগর বৃদ্ধির দিকে যেতে থাকে।

এছাড়াও শুধুমাত্র অর্থনীতি দিয়েও শিল্পায়ন ও নগরায়ন করাযায়। যেমন: যুক্তরাষ্ট্র করেছে বন্ড, স্টক মার্কেট দিয়ে। তাছাড়া যৌথ উদ্যোগ , ফলপ্রসূব্যাংকিং পদ্ধতির মাধ্যমে পুঁজি তৈরি হয়।

 ৩. Favorableforeign trade :

বৈদেশিক বাণিজ্যের মাধ্যমেও পুঁজি বাড়ানো বা তৈরি করা সম্ভব।যেমন : আমাদের দেশে গার্মেন্টস ব্যবসায়ের মাধ্যমে পুঁজির সঞ্চয় ও হয়।

রস্টো বলেছেন, উপরের কোনটিই রাষ্ট্রের না থাকতে পারে। তবেআরও একটি পদ্ধতিতে পুঁজির সঞ্চয়ন সম্ভব। তা হলো –

 ৪. সরাসরি বৈদেশিকবিনিয়োগ

পুঁজিবাদী পদ্ধতিতে আধুনিকায়নের সর্বশেষ উপায় হল এফডিআই।এখানে প্রথমে বিনিয়োগ হয় ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে। এই ক্ষেত্র থেকে পুঁজি অন্যান্য খাতেছড়িয়ে পড়বে। এই ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে সমাজে দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবে। কর্মসংস্থান, উৎপাদন,ভোগ এর মাধ্যমে অর্থনীতি একটি টেকসই অবস্থায় চলে আসবে। এটাকেই বলা হচ্ছে Drive tomaturity.

এরপর পুঁজি সঞ্চয়ন বা আধুনিকায়নের জন্য রাষ্ট্রের তেমনসহযোগিতা লাগে না। আপনা আপনিই চলে যায়।

অর্থনীতি চলবে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির মাধ্যমে। নতুন নতুন উৎপাদনক্ষেত্র তৈরি করবে।

  • Modernizationof political system (রাজনৈতিক কাঠামোর আধুনিকায়ন) coolman (1960)

রাজনৈতিক কাঠামোর আধুনিকায়নের জন্য তিনটি নিয়ামকের কথাবলেছেন কোলম্যান। একই সাথে তিনি এটাও বলেছেন, সমাজ আসলে একটি ঐতিহ্যবাহী সমাজ।

নিয়ামক তিনটি হলো –

 ১.Differentiation political system (রাজনৈতিক ব্যবস্থার শ্রেণীকরণ)

 ২.Secularization or equality ( নিরপেক্ষতা বা সমতা)

 ৩. Enhancingthe role and capacities of political institutions and process / structures ( রাজনৈতিকপ্রতিষ্ঠানের প্রসার ঘটানো)

কোলম্যানের তত্ত্ব অনেকাংশে স্মেলসারের StructuralDifferentiation’ তত্ত্বের সাথে মিল আছে। তিন নিয়ামকের প্রথমটি পরিণত হলে তৃতীয় স্তরেপৌঁছানো নিশ্চিত হবে।

  • Differentiationof political system কিভাবে হয় :

 ১.Differentiation of religion from norms (legal) [বিচারবিভাগ থেকে ধর্মকে পৃথককরণ]

একটি ঐতিহ্যবাহী সমাজের বিচারবিভাগ সাধারণত ধর্মভিত্তিক।রাজনীতিও ধর্ম একই সাথে চলে। এই সমাজকে আধুনিক করতে হলে আইনবিভাগকে সেক্যুলার করতে হবে। আলাদাকরতে হবে ধর্ম থেকে।

 ২.Differentiation of ideology from religion ( বিশ্বাস ও আদর্শকে ধর্ম হতে পৃথকিকরণ)

ঐতিহ্যবাহী সমাজের ধর্মগত বিশ্বাস ও আদর্শগুলো ধর্ম থেকেমুক্ত করে ফেলতে হবে। আধুনিক রাষ্ট্র কখনো ধর্মভিত্তিক হবে না।

 ৩.Differentiation of political power institution from administrative function ( রাজনৈতিকক্ষমতা হতে প্রশাসনিক কাজ পৃথককরণ)

সমাজে যে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা থাকে তাকে কোন ভাবে প্রশাসনিককাঠামোর সাথে মিলানো যাবে না।

  • Secularizationor equality in political system

Equality or Secularization – Distribution

Equality or Secularization – Right (legal right)

Equality or Secularization – opportunity

Equality or Secularization – participation

কোলম্যান বলেছেন, একটি ঐতিহ্যবাহী সমাজ যখন আধুনিক সমাজেযাবে তখন

  1. রাষ্ট্রের সকল নাগরিক সমান (সবার জন্য সমতানিশ্চিত হবে)
  2. আইন সবার জন্য সমান
  3. প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণে সবার সমান সুযোগ থাকবে
  4. রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ সবারথাকতে হবে। রাজনৈতিক নীতি নির্ধারনে সমান সুযোগ থাকবে।

উপর্যুক্ত বিষয়গুলোর মধ্য দিয়ে ৩য় স্তরটি নিশ্চিত হয় তাহল

  • Differentiationof political power consumption from administrative function
  • Enhancethe capacity of society’s political system

যে কোন নীতি বাস্তবায়নে ঐতিহ্যবাহী সমাজে বাধা থাকে। আধুনিকসমাজে থাকে না

অন্য দুই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যে সমাজ উন্নত হয়ছে তা বুঝারউপায় কী? কোলম্যান বলেছেন, এই পর্যায়ে বর্ণিত বিষয়গুলো ধরা পড়লে, দেখা গেলেই ধরে নিতেহবে তৃতীয়টি নিশ্চিত হয়েছে।

যে কোন নীতি বাস্তবায়ন সহজ হবে, প্রশস্ত হওয়ার সুযোগ থাকবেআধুনিক সমাজে। কিন্তু ঐতিহ্যবাহী সমাজে তা থাকবে না।

এগুলোর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের মধ্যে যূথবদ্ধতা তৈরি হয়। প্রান্তএবং দিগন্তের মধ্যে পার্থক্য থাকবে না।

 ১.Development of political community( রাজনৈতিক ব্যবস্থার উন্নয়ন)

 ২. Efficiencyof implementation of political decision ( রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কার্যকরী প্রয়োগ)

 ৩.Penetration of centre ( cohesion of state) / penetrive power of centralgovernment institution (ক্ষমতায় কেন্দ্রীয় সরকারের অনুপ্রবেশ)

 ৪.Comprehensiveness of the aggregation of interests by political Associates (রাজনৈতিকপ্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থের ব্যাপক প্রসার)

 ৫.Institutionalization of political process and organization (রাজনৈতিক প্রক্রিয়াগুলোপ্রাতিষ্ঠানিক রূপদান)

 ৬. Problemsolving capacity building ( সমস্যা সমাধানের যোগ্যতা)

 ৭. Ability tosustain new political demands and organization.( নতুন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনএর দাবি বজায় রাখার ক্ষমতা)

একটি ঐতিহ্যবাহী সমাজ আধুনিক সমাজে যাওয়ার সময় কিছু সংকটেরমুখোমুখি হবে। সেগুলো হল –

 ১. Crisis ofnational Identity (জাতীয় পরিচয় সংকট)

 ২. Politicallegislation for the new State ( নতুন রাষ্ট্রের রাজনৈতিক আইন প্রনয়ণে সংকট)

 ৩. Crisis ofpenetration (কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা কার্যকরী নীতি গ্রহণের সংকট)

 ৪.Integration of divisive political group (বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নানাধরণের নীতিগুলোএকত্রীকরণের সংকট)

 ৫. Absence ofoptimum numbers of channel ( গণদাবি তুলে ধরতে অংশগ্রহণের সংকট)

 ৬. Crisisduring failure to being economic change (অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পরিবর্তন এবং উৎপাদনও সেবার বণ্টনের ক্ষেত্রে সংকট)

  • Assumptionfrom Evolutionary perspective modernization is

 1. Episodicprocess (আধুনিকায়ন বার্তা

 2.Homogenizing process

 3.Europeanization / Americanization

 4.Irreversible process

 5.Progressive process

 6. Lengthyprocess

  • Assumptionfrom functionalist perspective

 1. Systematicprocess আধুনিকায়ন পদ্ধতিতান্ত্রিক। একটা পর্যায়কে বাদ দিয়ে আরেকটা পর্যায়ে যাওয়া যায়না।

 2.Transformative process আধুনিকায়ন একটি রূপান্তরমুখী প্রক্রিয়া ।

 3. Immanentprocess সর্বব্যাপী প্রক্রিয়া। সবকিছুকে স্পর্শ করবে। জীবন যাপনের সবকিছুকে। ধর্ম থেকেশুরু করে যৌনতা পর্যন্ত।

আধুনিকায়নের মধ্য দিয়ে কি ঘটে : ৪ টি গবেষণা

  • ম্যাকলেল্যান্ড(Meckleland) (1964) : Achievement motivation

এটি প্রধানত পর্যবেক্ষণ নির্ভর ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট থেকেতৈরী।

একটি ঐতিহ্যবাহী সমাজ যখন আধুনিক সমাজে প্রবেশ করে তখনএক ধরনের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে সেটা হয় তবে এটা মুখ্য নয়।

এখানে আরও কাজ করে

 ১. Venture ( উদ্যোগ)

 ২.Achievement ( অর্জন)

 ৩. Art (শিল্পকলা)

 ৪. Collection

কিন্তু, এগুলো গন্তব্যমুখী হলেও সবসময় লাভের ব্যাপার থাকেনা। এটা সমাজের জন্য তবে ব্যক্তি দ্বারা পরিচালিত। এই অর্জন আধুনিকায়নের দীর্ঘস্থায়িত্বেরঅবদান রাখে।

ম্যাকলেল্যান্ড আরও বলেছেন, একটি সমাজের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিযত বেশি হবে তার অর্জনের লক্ষ্য তত বেশি হবে। তবে, একটা পর্যায়ে গিয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিথেমে যাবে।

একটি সমাজের Achievement motivation বোঝার জন্য তার গান,কবিতা, গদ্য, পদ্যের বিশ্লেষণের প্রয়োজন হয়। Achievement motivation শুরু হতে যেমন৫০ বছর সময় লাগে, শেষ হতেও ৫০ বছর সময় লাগে। এটাকে বলা হয় ‘ক্রিটিক্যাল ৫০’ তবে এইপ্রণোদনা সংস্কৃতিতে সীমাবদ্ধ থাকে না, সবকিছু তে ছড়িয়ে পড়ে।

Achievement motivation এর জন্য সমাজে দুটো বিষয় জরুরী

 ১. Family (পরিবার)বাবা মায়ের ভূমিকা ২. Schooling ( শিক্ষা) পাশ্চাত্যমুখী শিক্ষা প্রণোদনাকে ত্বরান্বিতকরে।

  1. Inekleless(1964) : Modern men

ইনক্লেস এর আধুনিক মানুষ

একটি সমাজ আধুনিকতায় প্রবেশ করার পর তার মূল্যবোধ, আচরণ,ব্যবস্থাপনায় কি পরিবর্তন আসে, এটাই ছিল ইনক্লেসের গবেষণার বিষয়।

তিনি এই গবেষণার জন্য ৬ হাজার নমুনা নেন। বিভিন্ন অর্থনৈতিকপ্রবৃদ্ধির দেশ থেকে। তিনি দেখার চেষ্টা করেন আধুনিকায়নের ফলে ব্যক্তির পরিবর্তন আসে।

ব্যক্তির যে পরিবর্তন আসে সেগুলো হল –

 ১. খোলাখুলি (openness) নতুন যে কোন কিছু গ্রহণের ইচ্ছে তৈরি হয়

 ২. ব্যক্তির স্বাধীনতাচর্চার আগ্রহ বাড়ে

 ৩. বিজ্ঞানের প্রতিবিশ্বাস ও নির্ভরতা বাড়ে

 ৪. দীর্ঘমাত্রারপরিকল্পনা বাড়ে

 ৫. ব্যক্তি ও সমাজেরাজনীতি বাড়ে।

 ৬. প্রয়োজনে মানুষস্থান পরিবর্তন করে।

আধুনিকায়ন তত্ত্বের যে সমালোচনা হল তার প্রেক্ষিতে তৈরিহল নব্য আধুনিকায়ন তত্ত্ব। নব্য আধুনিক তাত্ত্বিকরা এর পিছনে যে জবাবগুলো দিচ্ছেন তাহল (Response to the critiques)

  • পার্থক্যের বিষয় : নব্য আধুনিকায়ন বনাম ধ্রুপদীএবং ঐতিহ্য

 ১. আধুনিকতা ওঐতিহ্য একসাথে চলতে পারে / আধুনিকা ও ঐতিহ্য একইসাথে উন্নয়নের নিয়ামক।

ধ্রুপদী আধুনিকতায় ঐতিহ্যকে পুরোপুরি বর্জনের কথা বলা হয়েছিল।কারণ এটা আধুনিকতার বাধা হিসাবে কাজ করে। কিন্তু নব্য তাত্ত্বিকরা বলেছেন, বর্জন নয়,সহযোগী হিসেবে।

 ২. পদ্ধতি/ আধুনিকতারপদ্ধতি

আধুনিকতা বিষয়ক গবেষণায় পদ্ধতিগত আনয়ন। বিশেষ বিশেষ দেশেরক্ষেত্রে তার ইতিহাস ও আধুনিকায়নে অবদান রাখতে পারে। কিন্তু ধ্রুপদী আধুনিকতা তত্ত্বেইতিহাসকে বর্জনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু, আধুনিকতা তত্ত্বে এসে বলেছেন ইতিহাসের ও ভূমিকাআছে।

তাছাড়া মনে করেছিলেন কোন প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা সব দেশেইএকরকম। কিন্তু, বিষয়টি তা নয়। একই প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা দেশভেদে ভিন্নরকম হতে পারে।

যেমন : হংকংয়ে পরিবার অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে,কিন্তু চীনে পারেনি। সেক্ষেত্রে আধুনিকায়নের ক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকাকে খারিজ করেদেয়া যাবে না।

 ৩. আধুনিকায়নেরআদল ( আধুনিকতা কোন একমুখী উন্নয়ন / আধুনিকায়নের রাস্তা / আদল মডেল নয় :

আধুনিকতা যে সব দেশেই একইভাবে ঘটবে, একই মডেলে হবে তা নয়।সব দেশেই আমেরিকা বা ইউরোপীয় মডেলে আধুনিকায়ন নাও হতে পারে।

সেক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের আধুনিকায়নের পথ ও ধরণ, ধারণ,পদ্ধতি,রূপ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। তবে, আধুনিকায়নই মূল কথা।

 ৪. বহিঃস্থ নিয়ামকেরভূমিকা ও দ্বন্দ্ব :

আধুনিকতায় প্রকাশ্য নিয়ামকের ভূমিকা :

ধ্রুপদী আধুনিকতা তত্ত্বে মনে করা হত একটি দেশের আধুনিকহওয়া, না হওয়ার পিছনে সেদেশের যুক্ত নিয়ামক ( Internal factor) বা ভেতরকার কারণগুলোইমুখ্য।

কিন্তু নব্য আধুনিকায়ন তাত্ত্বিকরা বলেছেন, শুধু ভেতরকারকারণগুলোই নয়, আধুনিকায়নে দেশের বহিঃভূর্ত নিয়ামক ও কাজ করে।

এই যে একটি দেশের নিজস্ব রীতি, ঐতিহ্য, ইতিহাস, আদর্শ বাদদিয়ে ইউরোপ / আমেরিকা প্রণীত মডেল দিয়ে আধুনিকায়নের কথা বলা হচ্ছে তা তৃতীয় বিশ্বেরনাও মেনে নিতে পারে।

এর দলেই সৃষ্টি হতে পারে শ্রেণীবদ্ধ। আদর্শগত নিয়ন্ত্রণ,ধর্মীয় বিদ্রোহ এই বিষয়গুলোও নব্য আধুনিকতার তাত্ত্বিকদের ভাবনায় যুক্ত হয়েছে।

অথবা, বিষয়টা এখন, ধ্রুপদী তাত্ত্বিকরা মনে করেছেন একটিদেশের তথা তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নের জন্য দেশগুলো আমেরিকা, ইউরোপের পরামর্শ পত্র, নাকগলানো, প্রভাব মেনে নিবে।

তাও সামান্য মাত্রায় বিদ্রোহ তৈরী হতে পারে।

কিন্তু, নব্য আধুনিকায়ন তাত্ত্বিকরা বলেছেন, এই নাক গলানোটাতৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করতে পারে। এবং নাক গলালে অস্থিতিশীল,সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.