যোগাযোগ নীতিমালা য় যাদের অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজন

যোগাযোগ নীতিমালায় যাদের অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজন

যোগাযোগের মত একটি ব্যাপক বিষয়ের উপর নীতিমালা প্রণয়ন কেবলমাত্র একজন ব্যক্তি, নিদিষ্ট বিভাগ বা মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। এসম্পর্কে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন -” বিভিন্ন স্তরের জনগণের দায়িত্বশীল অংশগ্রহণের মাধ্যমেই
যোগাযোগ নীতিমালা প্রণয়ন করা সম্ভব”।

এটি স্ব স্ব ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা এবং পরিবর্তীত বিষয় সমূহ সম্পর্কে অভিজ্ঞ দায়িত্বশীল ব্যক্তি বা সংগঠন, সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের যৌথ প্রচেষ্টার ফসল। একটি দেশের সমন্বিত জাতীয় যোগাযোগ নীতি প্রণয়নে যে সব ব্যক্তি, বিভাগ, প্রতিষ্ঠান ও মন্ত্রণালয়ের অংশগ্রহণ থাকা আবশ্যক তা আলোচনা করা হলো

যোগাযোগ নীতি প্রণয়ন কাদের অন্তর্ভুক্তি জরুরী ?

একটি দেশের সমন্বিত জাতীয় যোগাযোগ নীতি প্রণয়নে যে সব ব্যক্তি, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ থাকা আবশ্যক তা নিম্নে উল্লেখ করা হলো :

১. সরকারী নির্বাহীবৃন্দ

একটি দেশের জাতীয় যোগাযোগ নীতিমালা প্রণয়নে দেশের শাসন বিভাগের সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত কার্যনির্বাহীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। যেহেতু যোগাযোগ নীতিমালা দেশের প্রশাসনিক কাঠামোর সাথে সংশ্লিষ্ট তাই এতে সরকারী কার্যনির্বাহীদের অংশগ্রহণ অনিবার্য হয়ে উঠে। কারণ এতে আর্থিক বিষয়টি ও জড়িত। তাছাড়া পারষ্পরিক সহযোগিতার প্রয়োজনের দিকটি ও বিবেচনায় রাখতে হবে। আইন প্রণীত হওয়ার পর এটি সরকারের নির্বাহীদের যোগাযোগ নীতি প্রণয়নে জড়িত রাখা উচিত। এক্ষেত্রে সচিব, উপসচিব, যুগ্মসচিব সহ বিভিন্ন পদমর্যাদার সরকারী কর্মকর্তা জড়িত।

যোগাযোগ নীতিমালা

Learn More …….. পরিকল্পনা কী | যোগাযোগ পরিকল্পনা চক্র

২. আইন প্রণয়নকারী কমিটি সমূহ

যোগাযোগনীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে দেশের আইন প্রণয়নকারী সংস্থা অর্থাৎ দেশের আইন সভা এবং এর সদস্যদের অর্ন্তভূক্ত থাকাটা খুবই জরুরী। কারণ যোগাযোগ বিষয়ে কোন আইন প্রণয়ন করতে গেলে তাদের দ্বারস্থ হতে হয় এবং এই নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে বাজেটের প্রয়োজন হয় সে ব্যাপারে ও তাদের ভূমিকা রয়েছে। আইন প্রণেতা বা সংসদ সদস্যরা যদি যোগাযোগের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন না থাকলে এর সমন্বিত প্রণয়ন যেমন সম্ভব নয় তেমনি এর বাস্তবায়ন ও অনিশ্চয়তা হয়ে পড়ে। আবার আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অন্তর্ভুক্তি ও এক্ষেত্রে সমান গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় যোগাযোগ নীতিমালার ব্যাপারে উপ- কমিটি গঠনের প্রয়োজন দেখা দিলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এ ব্যাপারে সহায়তা করতে পারে

৩. সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ

উন্নয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যোগাযোগ অবকাঠামো গড়ে তুলতে হলে প্রয়োজনীয় অর্থ ও সম্পদ দরকার। এক্ষেত্রে পরিকল্পনা কর্তৃপক্ষের মুখাপেক্ষী হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। তাই দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রণয়নে জড়িত করলে অর্থ- সম্পদের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়। তাদের সার্বিক সহযোগিতা ও সুনির্দিষ্ট পরামর্শ যোগাযোগ নীতিমালা প্রণয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

৪. মন্ত্রণালয়সমূহ

যোগাযোগের সাথে শুধু তথ্য বা যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ই জড়িত নয়,বরং এর সাথে শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, অর্থ, স্বাস্থ্য, শ্রম প্রভৃতি মন্ত্রণালয়ই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।শুরু মন্ত্রণালয়গুলোই নয়, বরং এর অধীনে যে সমস্ত পরিকল্পনা কমিশন অপেক্ষাকৃত স্বাধীন ভাবে কাজ করছে যোগাযোগ নীতি প্রণয়নে এগুলো অপরিহার্য। যেমন : টেলিযোগাযোগের সাথে তথ্য ও সম্প্রচারের ব্যাপারটি জড়িত। শিক্ষা ও সংস্কৃতি মন্রণালয়ের কাজের সাথে অড়িও ভিজুয়াল ও প্রকাশনা বিষয়ক কাজগুলো জড়িত। চলচ্চিত্র শিল্পকে নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও স্হানীয় সরকারের সাহায্য প্রয়োজন। আবার অর্থনৈতিক সম্পদ বিভাগ এবং অভ্যন্তরীন সম্পদ বিভাগ, রাজস্ব বোর্ড বাজেট তৈরীতে নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে গণমাধ্যমের উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডকে সরাসরি প্রভাবিত করতে পারে। তাই এই দুটি বিভাগকে ও যোগাযোগ নীতিমালা প্রণয়নের সময় অবশ্যই সংশ্লিষ্ট করতে হবে।

৫. যোগাযোগ প্রতিষ্ঠান সমূহ

যোগাযোগ নীতিমালা প্রণয়নে যোগাযোগের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন : যোগাযোগ অধিদপ্তর, তথ্য অধিদপ্তর, পি.আই.ডি, সরকারী – বেসরকারী যোগাযোগ প্রতিষ্ঠান, পি.আইবি,চলচ্চিত্র প্রকাশনা অধিদপ্তর, প্রেস কাউন্সিল, NIMCO প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান যেগুলো যোগাযোগ ব্যবস্হার উন্নয়নে ভূমিকা রাখে সেগুলো কে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট করতে হবে।

৬. পেশাজীবি সংগঠন

পেশাজীবি সংগঠনের মধ্যে গণমাধ্যমের সাথে সরাসরি যুক্ত লোক জনের পাশাপাশি যোগাযোগ, শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষন প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে ও সংযুক্ত করতেে হবে। পেশাজীবি সংগঠনের মধ্যে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন,রিপোর্টার্স ইউনিট, সাংবাদিক সমিতি, জাতীয় প্রেস ক্লাব,এলম্যানাই এসেসিয়েশন প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

৭. সমাজ বিজ্ঞানী

সমাজ বিজ্ঞানীদের সমাজ কাঠামো এবং সামাজিক প্রবণতা সম্পর্কে যে বিশেষ জ্ঞান রয়েছে তা যোগাযোগ আচরণ বিশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য সমাজ বিজ্ঞানীরা তাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা দিয়ে যোগাযোগ নীতিমালা প্রণয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।

৮. অর্থনীতিবিদ

যোগাযোগ নীতিমালা প্রণয়নে অর্থনীতিবিদদের অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ। তাদের কাজ হলো উপাত্ত সংগ্রহের জন্য অভ্যন্তরিণ কৌশল সমূহের উন্নয়ন সাধন ও উপাত্ত গুলোর ফলাফল বিশ্লেষণ করা

No comments

Powered by Blogger.